খালিং ভাষা

খালিং ভাষা হলো সিনো-তিব্বতীয় ভাষা পরিবারের অন্তর্গত কিরান্তি শাখার ভাষা যা মূলত নেপাল ও ভারতের উত্তর-পূর্বাংশের রাজ্যগুলিতে ব্যবহৃত হয়। ২০১১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুসারে এই ভাষা ব্যবহারকারী মানুষের সংখ্যা ১৫০০০। পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং ও কোচবিহার জেলায় বিচ্ছিন্নভাবে এই ভাষার মানুষজন বসবাস করেন। খালিং ভাষায় দেবনাগরী লিপি ব্যবহৃত হয়।

খালিং ভাষার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো শব্দমূলের বিচিত্রতা। জ্যাকস (২০১২) এর মতে, খালিং ভাষায় একটি নির্দিষ্ট শব্দের অন্তত ১০টি বিভিন্ন শব্দমূল থাকতে পারে। এছাড়া খালিং ভাষার অপর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল ‘ইডিওফোন’ এর উপস্থিতি। ইডিওফোন বলতে সেই শব্দ বোঝায় যা চিত্রের দ্যোতক। খালিং ভাষায় প্রায় ৪০০ ইডিওফোনের অস্তিত্ব রয়েছে যা অন্যান্য কিরান্তি শাখার ভাষার তুলনায় সংখ্যায় অধিক। এই ইডিওফোনগুলির মধ্যে শব্দবিন্যাসগত বিচিত্রতা ছাড়াও ধ্বনিগত, রূপগত এবং মাত্রাগত পার্থক্যও বর্তমান।

ইডিওফোনগুলিকে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি কয়েকটি বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে নিরূপিত হয়, যথা- ফোনোট্যাকটিকস, রিডুপ্লিকেশন, বিশেষণের বিশেষণ, সেমানটিক ও প্রাগম্যাটিক। খালিং ভাষার ইডিওফোনগুলির নিজস্ব ফোনোট্যাক্টিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এরা রিডুপ্লিকেশনের ব্যবহার করে থাকে। এটি মূলত একটি বা দুটি অক্ষর বা কখনো স্বরধ্বনিতে সীমাবদ্ধ। ইডিওফোনগুলি প্রধানত বিশেষণের বিশেষণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এরা মূলত ক্রিয়াপদের পূর্বে অবস্থান করে এবং এদেরকে মূলগতভাবে বিশেষণের বিশেষণ বলা যায় না যেহেতু এগুলিকে নঞর্থক ভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। এদেরকে বাক্যের বিধেয় অংশ থেকে সরিয়ে দিলে বাক্যটি ব্যাকরণগতভাবে অশুদ্ধ হয়ে পড়ে। সেই বাক্যটি ভাব প্রকাশের উপযুক্ত থাকে না। খালিং ভাষার ইডিওফোনগুলি সেনসরি তথ্য পরিবেশন করে- এবং সম্ভাব্যতা নির্দেশ করে। এগুলি যেকোন কাজের প্রকাশমাত্রার বৃদ্ধি ঘটায়। এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলির উপর ভিত্তি করে ইডিওফোনগুলির শাব্দিক শ্রেণিবিভাগ করা হয়।

গ্রন্থপঞ্জী :

Census of India-2011

Frydenlund, S.A. 2015. LABOR STORIES FROM SOLUKHUMBU: CASE STUDIES OF KHALING INDEGENOUS DISCOURSE AND SITUATIONAL SHERPA IDENTITY. University of Colorado

Guillaume, Jacques et al. 2012 An Overview of Khaling Verbal Morphology. Language and Linguistics.

Lahaussois, A. 2017 Ideophones in Khaling Rai. Linguistics of the Tibeto-Burman Area, Dept. of Linguistics, University of California, pp. 179-201

Toba, I. Folk Art and Culture Change as Observed in a Khaling Village. Tokyo