এই জনজাতির মধ্যে চিত্র ও শিল্পকলা চর্চার ঐতিহ্যও রয়েছে। এদের প্রাচীন ঐতিহ্যের মধ্যে করতাল ও মৃদঙ্গ সহযোগে বৈষ্ণব পালাকীর্তন উল্লেখযোগ্য। অষ্টাদশ শতকে রাজা ভাগ্যচন্দ্রের সময় থেকে মণিপুরে বৈষ্ণব ঐতিহ্যের বিকাশ ঘটে। এদের মধ্যে রাসলীলারও ঐতিহ্য রয়েছে। এদের পালিত উৎসবগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘বিশু', রথযাত্রা ও কার্তিক উৎসব, মহারাস পূর্ণিমা, ফাগুওয়া ইত্যাদি। এদের মধ্যে অন্তর্গোত্র বিবাহই প্রচলিত। এদের সমাজ পিতৃতান্ত্রিক ও বেশ কয়েকটি গোত্র ও উপগোত্রে বিভক্ত। এদের প্রধান খাদ্য মূলত ভাত, মাছ ও শাকসবজি। মাংস ও মদ বিষ্ণুপ্রিয়া-মণিপুরি সমাজে নিষিদ্ধ। সামাজিক এবং ধর্মীয় ক্রিয়াকর্মে মাছও ব্যবহার করা হয় না। পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘পাছাটি’ নামে পরিচিত, যা ‘পাঁচহাতি’ শব্দ থেকে এসেছে। এই কাপড় প্রায় পাঁচ ফুট লম্বা হয়। মেয়েদের নিজস্ব পোশাক ‘লাহিং’, ‘ফানেক' ও ‘চাকসাবি’ নামে পরিচিত।
মণিপুর, অসম, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে যথাক্রমে সরকারি ভাষা মেইতেই, অসমিয়া ও বাংলার ব্যাপক প্রভাব ও অধিক ব্যবহারের কারণে এবং সরকারি সুযোগসুবিধা ও শিক্ষালাভের সুযোগ বেশি হওয়ায় এই জনজাতির নতুন প্রজন্ম ক্রমশ তাদের নিজস্ব ভাষাটির ব্যবহারের ও শেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এই ভাষার নিজস্ব লিপির অভাবও ভাষাটির সংরক্ষণের পক্ষে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। উক্ত প্রধান ভাষাগুলির প্রচুর শব্দ এবং ধ্বনি ও রূপতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য বিষ্ণুপ্রিয়া-মণিপুরি ভাষায় প্রবেশ করে ভাষাটির নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বিপন্ন করে তুলছে।
Census of India- 2001
Grierson, G.K. 1903. Linguistic Survey of India; Vol-5
Singha, Dr. K.P. 1982. An Etymological Dictionary of Bishnupriya Manipuri
Singha, J.M. & Singha, B. 1976. The Bishnupriya Manipuris and their language; Silchar