বির্জিয়া ভাষা
বির্জিয়া অথবা বিজোরি হলো অস্ট্রো-এশিয়াটিক ভাষা পরিবারের উত্তর-মুন্ডা শাখার খেরওয়াড়ি উপশাখার একটি ভাষা, যার সঙ্গে আসুরি ভাষার নিকট সম্বন্ধ রয়েছে। এই ভাষা মূলত মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডের কুয়ারদাগা, লোহারদাগা, গুমলা ও রাঁচি জেলা এবং পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাংশে দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, নদীয়া এবং মালদহ জেলায় প্রচলিত। ২০১১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুসারে এই জনজাতির মানুষের মোট সংখ্যা ৩১২৫৩ জন। তবে এদের মধ্যে ১০০০০ এর কম সংখ্যক মানুষ বির্জিয়া ভাষাকে কথ্য ভাষা হিসেবে ব্যবহার করেন। বির্জিয়া ভাষা ব্যবহৃত হয় এমন স্থানগুলিতে সরকারি ও আঞ্চলিক ভাষা হিসেবে সাদরি, হিন্দি, বাংলা, মুন্ডারি, সাঁওতালি ও বাংলার প্রাধান্য থাকায় বির্জিয়া ভাষার ব্যবহার ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। এই ভাষার নিজস্ব কোনো লিপির অস্তিত্ব নেই; লেখার কাজে নিকটবর্তী সর্বাধিক প্রচলিত ভাষার লিপি ব্যবহৃত হয়। বির্জিয়া জনজাতির সমাজ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে বেশ কিছু গবেষণা-গ্রন্থ থাকলেও এদের ভাষার ভাষাতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে প্রামাণ্য তথ্যের অভাব রয়েছে। বেশিরভাগ ভাষতাত্ত্বিক বির্জিয়া ভাষাকে অস্ট্রো-এশিয়াটিক ভাষা পরিবারের অংশ মনে করলেও অ্যান্ডারসন, প্রসাদ (১৯৬১) এর মতকে অনুসরণ করে ভাষাটিকে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা বংশের মধ্যে স্থান দিয়েছেন।
এই ভাষায় বৃহত্তর মুন্ডা পরিবারের অন্যান্য ভাষার মতোই তিনটি ব্যাকরণগত বচন (একবচন, দ্বিবচন ও বহুবচন), দুইটি লিঙ্গ, ইনক্লুসিভ ও এক্সক্লুসিভ উত্তম পুরুষ বহুবাচনিক সর্বনামের অস্তিত্ব রয়েছে। ক্রিয়ার কালসূচক সাফিক্স ও সাহায্যকারী ক্রিয়ার অস্তিত্ব রয়েছে। আংশিক, সম্পূর্ণ ও জটিল- এই তিন প্রকার রিডুপ্লিকেশনের অস্তিত্ব আছে। প্রকৃতিগতভাবে ভাষাটি অন্যান্য মুন্ডা ভাষার মতোই পলিসিন্থেটিক ও অ্যাগ্লুটিনেটিং।
গ্রন্থপঞ্জী :
Census of India- 2011
Anderson, G. 2008. The Munda Languages. New York: Routledge.
SBIRJIA DOCUMENTATION; 2016. SPPEL.
BIRJIA; 2018. ENVIS Hub: Jharkhand.
Kaahon; 2018. A new history since migration of a small ethnic tribe, Birjia.