মূলত পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকায় নর্মাডিক ও সেমি-নর্মাডিক প্রকৃতির ব্রাহুই ভাষা ব্যবহারকারী মানুষজন দেখা যায়। ব্রাহুই জনজাতি মূলত সুন্নি মুসলিম ধর্ম অনুসরণ করে। ‘ব্রাহুই’ শব্দটি ব্রাহুই ভাষার নিজস্ব শব্দ নয়। সরাইকি ‘ব্রাহো’ থেকে ব্রাহুই শব্দের উৎপত্তি। ব্রাহুই জনজাতির একমাত্র প্রামাণ্য জনগণনা বৃটিশ ভারতে করা হলেও, বর্তমানে ২০১১ খ্রিস্টাব্দের ভারতীয় জনগণনায় পৃথকভাবে ব্রাহুই জনজাতিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। বহির্জগতের মানুষের কাছে ব্রাহুই জনজাতির মানুষ নিজেদের ‘বালুচ’ হিসেবে পরিচয় দেওয়ার ফলে ব্রাহুই জনজাতির মোট জনসংখ্যা সম্পর্কে সবসময়ই কিছু ধোঁয়াশা থেকে গেছে। এই জনজাতির ভাষাটি অন্যান্য দ্রাবিড় ভাষা থেকে আলাদা ভৌগোলিক অঞ্চলে প্রচলিত হওয়ায় এর উৎপত্তি ও বিকাশ সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। প্রথম মতটি হলো, ব্রাহুই জনজাতি বৃহত্তর দ্রাবিড় জনগোষ্ঠীর একটি বিচ্ছিন্ন অংশ, যাদের চারপাশে ইন্দো-ইরানীয় ভাষা ও জাতির মানুষের প্রাধান্য রয়েছে। অপর একটি মত হলো, ১৩ বা ১৪ শতকে উত্তর-পশিম ভারত থেকে এই জনজাতি বর্তমান পাকিস্তানের বালুচিস্তানে পরিযানের মাধ্যমে চলে আসে। তৃতীয় মতটি হলো, ব্রাহুই জনজাতি ১০০০ খ্রিস্টাব্দের পর ‘মধ্যভারত’ থেকে পরিযানের মাধ্যমে বালুচিস্তানে প্রবেশ করে।
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইরানীয় জনগোষ্ঠীর আবির্ভাব একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, তার কারণ, পার্শ্ববর্তী কোনো এলাকাতেই ইরানীয়দের বসবাস নেই। এদের ভাষা এবং জীবনচর্চা প্রতিনিয়ত বাংলা, হিন্দি, উর্দু ইত্যাদি সরকারি ভাষা এবং অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষা ও সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে একটি আঞ্চলিক রূপ ধারণ করেছে; যার সঙ্গে দ্রাবিড় সংস্কৃতি বা ইরানীয় সংস্কৃতি- কোনোটিরই বিশেষ সাদৃশ্য নেই। তবে প্রান্তিক শ্রেণির মানুষ হওয়ার কারণে এই জনজাতির মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নতি ও শিক্ষার বিকাশ সঠিকভাবে হয়নি। ফলে নিজস্ব ভাষা ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের সংরক্ষণ এবং এক প্রজন্ম থেকে অপর প্রজন্মে সঞ্চারণের কোনো সচেতনতা পরিলক্ষিত হয় না।
Levina. 2020. South India’s ancient connection to Balochistan, the Brahui language; Resonant News.
Pagani, Luca; Colonna, Vincenza. 2017.; An Ethnolinguistic and Genetic Perspective on the Origins of the Dravidian-Speaking Brahui in Pakistan. Man in India.
Venkatesh, Karthik. 2017. A slice of South India in Balochistan. Mint