চাং হলো সিনো-তিব্বতীয় ভাষাবংশের ব্রহ্মপুত্র শাখার কোনয়াক উপশাখার একটি ভাষা। ভাষাটি ভারতের নাগাল্যাণ্ড রাজ্যের তুয়েনসাং জেলার ৩৬টি গ্রামে চাং জনজাতির মানুষের মধ্যে প্রচলিত। এছাড়া অসম এবং পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের পার্বত্য অঞ্চলের তরাই-ডুয়ার্সের অন্তর্গত জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কালিম্পং রাজ্যে বিক্ষিপ্তভাবে চাং জনজাতির মানুষ বসবাস করেন। তবে নাগাল্যাণ্ড রাজ্যের উক্ত গ্রামে প্রচলিত চাংভাষার প্রকারটিই মান্য প্রকার হিসেবে স্বীকৃত। এটি উত্তর-পূর্ব ভারতের বোড়ো-গারো শাখার উত্তর-নাগা গোষ্ঠীর ভাষাগুলির মধ্যে অন্যতম। ২০০১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুসারে চাংভাষা ব্যবহারকারীর মোট সংখ্যা ছিল ৬২০০০; এবং ২০১১ খ্রিস্টাব্দের সর্বশেষ জনগণনা অনুযায়ী এই সংখ্যা হলো ৬৪২২৬। চাং জনজাতি নিজেদের মধ্যে কথাবার্তার ক্ষেত্রে চাংভাষা এখনো ব্যবহার করলেও বাইরের মানুষজনের সঙ্গে বার্তালাপের ক্ষেত্রে নাগামিজ ও ইংরেজি ভাষার ব্যবহার করে থাকে। অর্থাৎ চাং জনজাতির মধ্যে দ্বিভাষিক এবং ক্ষেত্রবিশেষে ত্রিভাষিক প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়।

এই ভাষা মূলত মৌখিক, এর কোনো প্রামাণ্য লিখিত রূপের সন্ধান পাওয়া যায় না। বার্লিং কথিত ‘SAL’ ভাষাগুলির মধ্যে অন্যতম হলো চাংভাষা। লিখিত রূপ না থাকায় ভাষাটির বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে প্রামাণ্য তথ্যের অভাব থাকলেও চাং জনজাতির নিজস্ব ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। এই ভাষার সঙ্গে চাখেসাং জনজাতির ভাষার উল্লেখযোগ্য সাদৃশ্য রয়েছে। এই সাদৃশ্য ধ্বনিতাত্ত্বিক, শব্দ এবং অর্থতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের নিরিখে নির্ধারিত হয়েছে। মোট ৩৭টি ব্যঞ্জনধ্বনির অস্তিত্ব রয়েছে যেগুলি উচ্চারণের স্থান ও উচ্চারণপদ্ধতির নিরিখে বাইলেবিয়াল, লেবিওডেন্টাল, অ্যালভিওলার, প্যালেটাল, ভেলার, উভুলার ও গ্লটাল; এবং ন্যাসাল, প্লোসিভ, অ্যাফ্রিকেট, ফ্রিকেটিভ ও অ্যাপ্রক্সিমেণ্ট- এই শ্রেণিগুলিতে বিভক্ত। সিনো-তিব্বতীয় ভাষাবংশের বেশিরভাগ ভাষার মতোই চাংভাষায় তিনটি পৃথক টোন (রাইজিং, লেভেল ও ফলিং-রাইজিং) রয়েছে। নিজস্ব লিপির অস্তিত্ব না থাকায় এই ভাষা লেখার প্রয়োজনে ল্যাটিন লিপি ব্যবহার করা হয়।

VOWELS

গ্রন্থপঞ্জী :